সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ২২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে গেছে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক।
মূল্য সূচকের বড় উত্থান হলেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার চেয়ে বেশি। এরপরও একদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮১ হাজার ২৫১ কোটি টাকা, যা আগের দিন ছিল ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ একদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা। মূলধন বাড়ার অর্থ হলো তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।
বড় অঙ্কের বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৭১৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে ২০১৯ সালের ৩ মার্চের পর সূচকটি সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে আসলো। ২০১৯ সলের ৩ মার্চ সূচকটি ৫ হাজার ৭২৩ পয়েন্টে ছিল।
এদিকে প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১২৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৯৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচক এমন হু হু করে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দামও করে বাড়তে থাকে। এতে দফায় দফায় দাম বাড়িয়েও অনেক কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারেননি কিছু বিনিয়োগকারী। দাম বাড়ার সীমার সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি চলে যায় প্রায় দেড় ডজন কোম্পানি।
এদিন এক শতাংশের ওপরে দাম বেড়ছে ১০০টির। এর মধ্যে ৭৭টির দাম বেড়েছে ২ শতাংশের ওপরে। ৪ শতাংশের ওপরে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ৪২টি। ২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ছে ৬ শতাংশের ওপরে। আর ৯ শতাংশের ওপরে দাম বেড়েছে ১১টির।
কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বড় অঙ্কে বাড়লেও এদিন দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান নাম লিখিয়েছে। ডিএসইতে দিনভর লেনদেনে অংশ নেয়া ১২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮০টির। আর ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অবশ্য সূচকের বড় উত্থানের সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ৫০৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এই হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৬৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৬৫ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার ১৩৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯৯ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে ডিএসইতে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাফার্জহোলসিম, আইএফআইসি ব্যাংক, পাওয়ার গ্রিড, স্কয়ার ফার্মা, কনফিডেন্স সিমেন্ট, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস এবং সাইফ পাওয়ার।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৭৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৯০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৭টির এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।